দাজ্জাল এর কাজ কি

 দাজ্জাল: ব্যক্তি না সিস্টেম?


আসসালামু আলাইকুম।

আজকের আলোচনার বিষয় হলো দাজ্জাল: এটি কি একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি, নাকি একটি সিস্টেম? এই প্রশ্নটি বহুদিন ধরে আলোচিত এবং এর উত্তর খুঁজতে আমরা কুরআন, হাদিস, ইজমা, কিয়াস এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটের আলোকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করবো।প্রথম জেনে নেওয়া জাক  দাজ্জালের সংঙ্গা কি?

দাজ্জাল শব্দের অর্থ হলো মিথ্যাবাদী বা প্রবঞ্চক। ইসলামে দাজ্জালকে একটি মহাফিতনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা কিয়ামতের অন্যতম বড় নিদর্শন।

কুরআনে দাজ্জাল শব্দটি সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, তবে ফিতনার প্রতি সতর্ক করা হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে সূরা আল-কাহফ পড়া উচিত।

আল্লাহ বলেন, “তোমরা পৃথিবীতে ফিতনা ছড়িও না।” 

দাজ্জালের ফিতনা হবে শয়তানের প্রলোভনের সর্বোচ্চ রূপ।

হাদিসে বলা হয়েছে,দাজ্জাল হবে একচোখা।

তার দুই চোখের মাঝখানে ‘কাফির’ শব্দ লেখা থাকবে।সে নিজেকে স্রষ্টা দাবি করবে।

 তার ক্ষমতা সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে 

দাজ্জালের হাতে জান্নাত ও জাহান্নামের মতো বিভ্রম থাকবে। যেটা সম্পুর্ন ধোকা।

সে মানুষকে বৃষ্টি ঝরানো এবং জমি উর্বর করার মতো প্রলোভন দেখাবে।  জানা জরুরী এত কিছুর পড়েও দাজ্জালের ফিতনা থেকে কিভবে বাচতে পারি?

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

“দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে সূরা আল-কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করো।” (মুসলিম: ৮০৯)

 গুরুত্বপুর্ন বিষয় হলো ইজমা ও কিয়াসের আলোকে দাজ্জাল আসলে কে?  কোন ব্যাক্তি নাকি কোন সিষ্টেম?  আসুন বিস্তারিত জেনে নেই।

ইজমার দৃষ্টিকোণ থেকে,

মুসলিম উম্মাহর ঐক্যমত হলো,

দাজ্জাল একজন ব্যক্তি, তবে তার কার্যক্রম একটি সিস্টেম বা মতবাদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

তার আগমন হবে কিয়ামতের পূর্বনিদর্শন।

অন্য দিকে কিয়াস বা (যুক্তিনির্ভর ব্যখা) বলে,

দাজ্জাল ব্যক্তি হিসেবে আসবে, তবে তার প্রভাব থাকবে একটি বৃহৎ সিস্টেমের মাধ্যমে।

বস্তুবাদ, ভোগবাদ, এবং ধর্মহীনতা তার সিস্টেমের অংশ হতে পারে।

এখন জেনে নেই বর্তমান প্রেক্ষাপট দাজ্জাল সম্পর্কে  কি বলে?

দাজ্জালের প্রলোভন শুধু একজন ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।

বর্তমান বিশ্বে ভোগবাদ, প্রযুক্তির অপব্যবহার, এবং বিভ্রান্তিমূলক মতবাদ ছড়িয়ে পড়ছে, যা দাজ্জালের সিস্টেমের অংশ হতে পারে

বর্তমান সময়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে এটি দাজ্জালের আগমনের পূর্বপ্রস্তুতি হতে পারে। মানুষের মনে ভোগবাদের প্রবণতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ধর্ম থেকে দূরে সরিয়ে আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাস তৈরি করা হচ্ছে, যা দাজ্জালের ফিতনার বৈশিষ্ট্য।

 সবশেষে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাচতে আমাদের করণীয়  হলো আল্লাহর প্রতি ঈমান মজবুত করা এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করা

রাসুলুল্লাহ (সা.) দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য দোয়া শিখিয়েছেন:

“আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন ফিতনাতি মসীহি দাজ্জাল।”

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে নিয়মিত সূরা আল-কাহফ পড়া।

দাজ্জাল ব্যক্তি হোক বা সিস্টেম, তার মূল লক্ষ্য হলো মানুষের ঈমান নষ্ট করা এবং আল্লাহর পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া। আমাদের উচিত আল্লাহর প্রতি অটল থাকা, ইসলামি শিক্ষার উপর দৃঢ় থাকা এবং দুনিয়ার ফিতনা থেকে নিজেদের রক্ষা করা।


আল্লাহ আমাদের দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা করুন।

ওয়াসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

Comments

Popular posts from this blog

জঙ্গি নাটকে স্ত্রী কে ধর্ষণ

নতুন ব্লগে আপনাকে সাগতম

গায়রত কি?